নয়াদিল্লি: রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে দাখিল হওয়া এক মামলায় সোমবার সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্যে যেন বজ্রপাত নেমে এল আবেদনকারীদের যুক্তির ওপর। আটক হওয়া কয়েক জন রোহিঙ্গার ‘নিখোঁজ’ হওয়ার অভিযোগ নিয়ে যখন আদালতে উত্তপ্ত আলোচনা চলছে, তখনই বেঞ্চের তীক্ষ্ণ প্রশ্ন— “অবৈধভাবে ভারতে ঢুকলেই কি আমরা তাদের জন্য রেড কার্পেট বিছিয়ে দেব?
আদালত সাফ জানিয়ে দেয়, ভারত সরকার রোহিঙ্গাদের কোনওভাবেই ‘শরণার্থী’ মর্যাদা দেয়নি। ফলে তারা আইনগতভাবে অনুপ্রবেশকারী— এবং সেই অনুযায়ীই তাদের বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, “যাঁরা নথিহীন অবস্থায় সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়েছেন, তাঁরা পরে এসে রাষ্ট্রের কাছে খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্য বা শিক্ষার দাবি তুলতে পারেন না।”
আবেদনকারী পক্ষের দাবি— দিল্লি পুলিশ আটক করা কিছু রোহিঙ্গাকে পরবর্তীতে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে, এবং পরিবারকে এ নিয়ে কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি। ঠিক সেই মুহূর্তেই আদালতের কড়া প্রতিক্রিয়া সামনে আসে। বেঞ্চের বক্তব্য, “দেশে লক্ষ লক্ষ মানুষ এখনও মৌলিক সুবিধার অভাবে ভুগছেন। সেই প্রেক্ষিতে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের জন্য আলাদা সুবিধার প্রত্যাশা বাস্তবসম্মত নয়।”
তবে আদালত মানবাধিকারকে একেবারেই অস্বীকার করেনি। বিচারপতি তা স্পষ্ট করে বলেন— আটক ব্যক্তিদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ বা তৃতীয়-ডিগ্রি প্রয়োগ করার কোনও অধিকার নেই পুলিশের। আইন ভঙ্গ করলেও মানবিক ব্যবহারের ন্যূনতম মান রক্ষা আবশ্যক।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৬ ডিসেম্বর নির্ধারিত। তখনই জানা যাবে রোহিঙ্গাদের হেফাজত, অবস্থান এবং ভবিষ্যৎ আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে আদালতের চূড়ান্ত অবস্থান।