প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ব্যাঙ্কশাল আদালতে চূড়ান্ত চার্জশিট জমা দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। এই চার্জশিটে অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে নাম রয়েছে প্রাক্তন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি ও তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য, তাঁর স্ত্রী রত্না বাগচি এবং অয়ন শীলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বিভাস অধিকারীর।
৭০ পাতার এই চার্জশিটই চূড়ান্ত চার্জশিট বলে জানা গিয়েছে। তাতে নাম রয়েছে মানিক ভট্টাচার্য, বিভাস অধিকারীর। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সেক্রেটারি রত্না চক্রবর্তী বাগচির বিরুদ্ধেও চার্জশিট দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
সিবিআইয়ের অভিযোগ ছিল, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সাড়ে ৩৫০ জনের চাকরি ঘুরপথে হয়েছিল। নাকাশিপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য সেসময় প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি ছিলেন। মানিকের সঙ্গে রত্না চক্রবর্তী বাগচি ষড়যন্ত্রে যুক্ত হয়েছিলেন বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে অভিযোগ ছিল। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুনীতি মামলায় ৩২ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি যায়। ২০২৩ সালের মে মাসে এই নির্দেশ জারি করেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পরে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে পর্ষদ ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল। পরে ডিভিশন বেঞ্চও সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় বহাল রেখেছিল। মামলা গড়িয়েছিল সর্বোচ্চ আদালতেও। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলা প্রথমে আলিপুর আদালতে চলছিল। পরে সেই মামলা ব্যাঙ্কশাল আদালতে ওঠে।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সাল থেকে জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সিবিআই মামলায় জামিন পেয়েছেন তিনি। এর আগে তিনি ইডির মামলাতেও জামিন পেয়েছিলেন। কবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জেলমুক্তি হবে? সেই চর্চা চলছে। মানিক ভট্টাচার্য আগেই জামিন পেয়েছেন। বিভাস চক্রবর্তী এই মুহূর্তে জেলবন্দি আছেন। ভুয়ো থানা থেকে সমান্তরাল প্রশাসন, জালিয়াতির অভিযোগে এই প্রাক্তন তৃণমূল নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে নয়ডা পুলিশ।
দুর্গাপূজা শেষ হতেই কেন্দ্রীয় সংস্থা ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে এবং এই চার্জশিট জমা দেওয়ার ফলে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত নতুন মোড় নিল বলে মনে করা হচ্ছে। আদালতের পরবর্তী শুনানিতে চার্জশিটটি গ্রহণ করা হবে কিনা, সেই দিকেই নজর রয়েছে সকলের।